Thursday 1 October 2015

গৌতম বুদ্ধ

অনেক দিন পর পোস্ট করছি আশা করি সকলের ভালো লাগবে | আজ গৌতম বুদ্ধ সম্প র্কে দু চার কথা বলব |

বলা হয় নেপালের কপিলাবস্তুুর এক শাক্য বংশে বুদ্ধদেবের জন্ম হয় | তবে তাঁর জন্ম স্থান অবশ্য
কপিলাবস্তুুর নয়, প্রাচীন লুম্বিনী বা বর্তমান রুম্মিনদেঈ গ্রাম তাঁর জন্ম স্থান | তাঁর পিতা শুদ্ধোদন,মা মায়াদেবী | গৌতমের জন্মের সাতদিনের পর তাঁর মা মারা যান | এরপর তিনি তাঁর বিমাতা তথা মাসী প্রজাপতি গৌতমীর কাছে মানুষ হন | কোনো কোনো ঐতিহাসিক মনে করেন গৌতমী মাসির কাছে মানুষ হওয়ায় তাঁর নাম গৌতম | তবে বেশির ভাগ ঐতিহাসিক মনে করেন গৌতম গোত্রে জন্ম হওয়ায় তিনি গৌতম | তাঁর পিতৃ দত্তা নাম ছিল সিদ্ধা র্থ | তাঁর জন্মকালে সকলের ইচছাপূরণ হয়েছিল তাই এরুপ নামকরণ করা হয় বলে মনে করা হয় | শাক্যবংশে জন্ম করেন বলে তাঁকে শাক্যসিংহ বলা হয় | সম্যক
জ্ঞানলাভের পর তাঁর বুদ্ধ নামকরণ হয় |

ছেলেবেলা থেকেই গৌতমের মধ্যে একধরনের উদাসীনতা এবং চিন্তাশীল ভাবধারা লক্ষ্যকরা যায় | গৌতমের এই উদাসীনতা পিতা শুদ্ধোধনকে চিন্তিত করে তোলে | তাই সংসারের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য তিনি গৌতম কে যশোধরা ( গোপী) নামে এক পরমাসুন্দরী কন্যার সাথে বিবাহ দিয়ে দেন | গৌতমের বয়স ছিল তখন মাত্র 16 বছর | 29 বছর বয়সে গৌতমের একটি পুত্র সন্তান হয়| যার নাম রাহুল | কিন্তু এই সময় গৌতম ভাবতে থাকেন তিনি ক্রমশ সংসারের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন এবং এই বন্ধন মুক্তির জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন |

ললিতবিস্তার, বুদ্ধচরিত প্রভৃতি গ্রন্থে গৌতমের সন্নাস নেওয়া সম্প র্কে বলা হয়েছে রাতের বেলায় আত্মীয়সজনদের না জানিয়ে ঘোড়া কন্টকের পিঠে চড়ে সারথি ছন্দকের সঙ্গে তিনি গৃহ ত্যাগ করেন | পথে কন্টক ও ছন্দক কে বিদায় দিয়ে তিনি তাঁর পথচলা শুরু করেন |

অন্যদিকে অরিয়পরিয়েসনসু
ত্তে অন্য এক কাহিনীর অবতারনা আছে | এই গ্রন্থ থেকে জানা যায় গৌতম তাঁর সন্নাস গ্রহণের সংকল্পের কথা পিতা এবং মাসী কে বলেছিলেন | কিন্তু তাদের অনুমতি না পেয়ে তিনি একাকী বাড়ি ছেড়ে চলে যান | গৌতমের গৃহত্যাগের ঘটনাকে মহাভিনিস্ক্রমন. বলা হয় |

কেন গৌতম সন্ন্যাস গ্রহণ করলেন এখন সে সম্পকে বলব |
সুত্তনিপাতে বলা হয়েছে, গৃহীজীবন বন্ধনময়, দুঃখ কষ্টে ভরা | এই জীবনের প্রতি গৌতমের বিতৃষ্ণা জন্মে এবং এর ফলেই তিনি সন্ন্যাস নেন | ললিত বিস্তারে বলা হয়েছে প্রথম দিন জরা গ্রস্ত লোক. , দিতীয় দিন রুগ্ন ব্যক্তি তৃতীয় দিন মৃতদেহ ও চতুর্থ দিন সৌম্য কান্তি সন্ন্যাসী দেখে গৌতমের মনে প্রবল বৈরাগ্য জন্মে এবং তিনি গৃহত্যাগী হন |

গৃহ ত্যাগের পর ছয় বছর ধরে সন্ন্যাসী গৌতম মুক্তির সন্ধানে নানা স্থান ঘুরে বেড়ান | বৈশালী এবং রাজগৃহে দুজন শিক্ষকের কাছে শাস্ত্র পাঠ নেন | কিন্তু এসব করে তিনি মুক্তির পথ খুজে পেলেন না | অবশেষে তিনি উরুবি ল্ব বা বর্তমান বোধগয়া নামক স্থানে গিয়ে তপস্যা শুরু করেন | সঙ্গে ছিলেন তাঁর পাঁচ সতীর্থ | এ সাধনা চলল দীর্ঘ . বছর | কিন্তু কঠোর কৃচ্ছসাধনের পরও সত্যের কোন সন্ধান মিলল না | এ থেকে তাঁর উপলব্ধি হয় যে শরীর কে কষ্ট দিয়ে কঠোর তপস্যা করলেই সত্য লাভ করা যাবে, এ কথা ঠিক নয় | তাই গৌতম পাশেই বয়ে যাওয়া নৈরাঞ্জনা ( ফ ল্গু ) নদীতে স্নান করে সুজাতা নামে এক বনিক কন্যার দেওয়া পরমা ন্ন গ্রহণ করে এবং তাঁর পর. অনেকটা সাধারণ ভাবে মুক্তি লাভের পথে ব্রতী হয়ে এক অশ্বত্থ গাছের তলায় গভীর ধ্যানে বসেন | কিন্তু এইপবে তাঁর খাদ্য গ্রহণ তাঁর পাঁচ জন শিষ্য ভালো চোখে দেখেননি | তারা এতে বিরক্ত হয়ে তাঁর সঙ্গ ছেড়ে চলে যান |

অবশেষে বৈশাখী পূর্ণিমার রাতে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ | উনপঞ্চাশ দিন ধরে ধ্যান করার পর
তিনি বোধি প্রাপ্ত হন। এই সময় তিনি মানব জীবনে দুঃখ ও
তাঁর কারণ এবং দুঃখ নিবারণের উপায়
সম্বন্ধে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেন, যা
চতুরার্য সত্য নামে খ্যাত হয়।
তাঁর মতে এই সত্য সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ
করলে মুক্তি বা নির্বাণ লাভ সম্ভব।তখন তাঁর বয়স 35 বছর |
এরপর সারনাথে বুদ্ধ সর্বপ্রথম তাঁর ললিতবানী প্রচার করেন | শ্রোতারা হলেন তাঁর পাঁচ জন প্রাক্তন সতীর্থ -- বপ্র, ভদ্রিয়, অশবজিৎ,মহানাম ও কৌনডি ন্য | এই ঘটনা ধর্ম চক্রপ্রব র্তন নামে খ্যাত |
মহাপরিনিব্বানসুত্তে বলা হয়েছে, কুশীনগর যাওয়ার পথে বুদ্ধ পাবা শহরে এসে উপস্থিত হন | সেখানে তিনি কর্মকার চুন্দের অতিথি হন | চুন্দের বাড়িকে শূকরের মাংস খেয়ে বুদ্ধ অতিসার রোগে আক্রান্ত হন | সেখানেই তাঁর দেহাবসান হয়. | বুদ্ধের দেহাবসান পরিনিবা র্ণ বা মহাপরিনিবা র্ণ নামে খ্যাত |
 

1 comment: