1879 সালের 8ই ডিসেম্বর নদীয়া জেলার কুস্টিয়া মহকুমার
ছোট্টশান্ত কয়া গ্রামে মামার বাড়িতে যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম হয় |
বর্তমানে গ্রামটি বাংলাদেশের অন্তর্গত | তাঁর পিতার নাম উমেশচন্দ্র
মুখোপাধ্যায় ও মাতা শরৎশশী দেবী | যতীন্দ্রনাথের পৈত্রিক বাসস্থান ছিল যশোর
জেলার ঝিনাইদহ মহকুমার রিসখালি গ্রামে | মাত্র 5 বছর বয়সে তাঁর পিতার
মৃত্যু হয় | ছেলের হাত ধরে মা চলে এলেন মামার বাড়িতে | মামার বাড়িতেই
যতীন্দ্রনাথ মানুষ হয়েছিলেন | ছোটো বেলা থেকেই তিনি ছিলেন দুরন্ত প্রকৃতির |
বন্ধু বান্ধব দের সঙ্গে মিশে নানা ধরনের দুষ্টামি করে বেড়াতেন |
নদীয়া জেলার একটি গ্রাম | সন্ধ্যার অন্ধকারে গ্রামের পথঘাট জনশূন্য হয়ে যায় | কারণ বিরাট এক রয়েল বেঙ্গল টাইগার এলাকায় হানা দিতে শুরু করেছে | তখন ওই গ্রামে এসেছিলেন যতীন মুখোপাধ্যায় | কলকাতার সরকারি চাকুরে | এই গ্রামে মামার বাড়িতে তাঁর ছোটোবেলার দিনগুলো কেটে ছিল | যতীন ঠিক করলেন বাঘের সাথে তিনি লড়াই করবেন এবং বাঘের উপদ্রব থেকে গ্রাম বাসীদের রক্ষা করবেন | কিন্তু কীভাবে তিনি বাঘের মোকাবিলা করবেন? তাঁর কাছে তো বন্দুক নেই | শেষ পর্যন্ত একটা ভোজালি নিয়ে বাঘের মুখোমুখি দাঁড়াবার সিদ্ধান্ত নিলেন | যতীনের মামাতো ভাইয়ের একটা বন্দুক ছিল | তিনি যতীনের এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য তার সঙ্গী হয়েছিলেন | কিন্তু মামাতো ভাইয়ের বন্দুকের গুলিতে কিন্ত বাঘ বধ হয়নি | কারণ তাঁর বন্দুকের গুলি হয়েছিল. লক্যভ্রষ্ট | গুলির আঘাতে বাঘটা আহত হয়েছিল | আহত হয়ে বাঘটি ভয়ংকর হয়ে ওঠে | গুলি খেয়ে বাঘটি যতীন্দ্রনাথের দিকে ছুটে আসে | যতীন্দ্রনাথকে আক্রমণ করে | যতীন বাঘের মাথায় ভোজালি দিয়ে বারবার আঘাত করতে থাকেন | বাঘ তাঁর দুটি হাঁটুতে কামড় বসালে | রক্তাক্ত যতীন তখনও উন্মুক্তের মতো বাঘটার সঙ্গে লড়াই করছেন | নিজের দেহের আঘাত অগ্রাহ্য করে হিংস্র ভয়ংকর বাঘকে মাটিতে চেপে ধরলেন | শেষ অব্দি ভোজালিটা বাঘের পেটে বসিয়ে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন | সেই আঘাতের বাঘটা শেষ হয়ে গেল | আর সেদিন থেকে সকলের কাছে তিনি পরিচিত হলেন বাঘাযতীন হিসেবে |
কৃষ্ণনগরের এ.ভি স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যতীন এলেন কলকাতায়, ভর্তি হলেন কলেজে | তখন থেকেই. যতীন্দ্রনাথ ছিলেন স্বাধীনচেতা মানুষ | তিনি ঠিক করলেন পড়াশোনায় আর সময় নষ্ট করবেন না | শর্টহ্যান্ড ও টাইপ রাইটিং শিখলেন | তখনকার দিনে এই দুটি বৃত্তি শিক্ষার খুবই দাম ছিল | 1904 সালে সরকারি চাকুরি লাভভ করলেন | এই চাকুরীতে যোগ দেবার আগে থেকেই বিপ্লবী দলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঘটে গিয়েছিল | অনুশীলন সমিতিতে যোগ দান করেছিলেন তিনি | হাওড়া ষড়যন্ত্র মামলার জন্য তাঁকে এক বছর ধরে নির্জন কারাগারে থাকতে হয়েছিল | এরফলে তাঁর সরকারি চাকুরী চলে গিয়েছিল এবং তখন বাঘাযতীন ঠিকাদারির কাজ শুরু করেন |
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে বাঘাযতীন গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হন | তিনি সর্বভারতীয় বৈপ্লবিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গোপনে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জাপান ও জার্মানি থেকে অস্ত্রাদি আমদানি করে সশস্ত্র বিপ্লবের পরিকল্পনা করেন | ঠিক হয় 'মেভারিক ' নামক জার্মান জাহাজে অস্ত্র এনে বালেশ্বরে রেললাইন অধিকার করে ইংরেজের যাতায়াত পথ অবরোধ করবেন | বাঘাযতীন তাঁর চারজন সহকর্মী কে নিয়ে চলে গেলেন বালেশ্বরের কাছে কোপাতবোদা গ্রামে | সন্নাসী সেজে আশ্রম গড়লেন | কবে জার্মান যুদ্ধ জাহাজ পৌছবে তার জন্য প্রতিক্ষার প্রহর শুরু হল | এই জাহাজ শেষ পর্যন্ত ভারতে আসেনি | বিপ্লবীদের প্রতিক্ষা ব্যর্থ হল | বাঘাযতীন আবার অস্ত্র আমদানির পরিকল্পনা করলেন কিন্তু এবারও ব্যর্থ হলেন | অন্যদিকে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিপ্লবী দের ধরতে পুলিশ কমিশনার টেগার্ট বালেশ্বরে পৌঁছে গেলেন | গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বাঘাযতীন টেগার্টের বালেশ্বরে আসার খবর পেলেন | বাঘাযতীন তাঁর কিশোর চারসঙ্গী চিত্তপ্রিয়, মনোরঞ্জন, নীরেন ও জ্যোতিষ কে তাঁর সঙ্গ ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলেন | কারণ পুলিশ এদের কাউকে চেনে না | কিন্তু বিপ্লবী কিশোর রা নেতাকে ত্যাগ করতে রাজি হলেন না |
শেষপর্যন্ত 1915 সালের 9ই সেপ্টেম্বর বুড়িবালাম নদীর ধারে চাষখন্ড নামে একটা জায়গায় বাঘাযতীন তাঁর চার কিশোর সঙ্গী কে নিয়ে খাদের মধ্যে লুকিয়ে রইলেন | একদিকে মাত্র পাঁচ জন অন্যদিকে অসংখ্য সৈন্য | বিপ্লবীদের কাছে দেশী পিস্তল | ব্রিটিশ দের হাতে রাইফেল | শুরু হল গুলি বর্ষণ | বিপ্লবী রা একসঙ্গে গুলি ফায়ার করলেন | যাতে শত্রুপক্ষ বুঝতে না পারে , সংখ্যায় তাঁরা কতজন আছেন |শেষ অব্দি বিপ্লবীদের গুলি ফুরিয়ে গেল | লড়াই চলাকালীন মৃত্যুপথযাত্রী চিত্তপ্রিয়কে একফোঁটা জলের জন্য ছটফট করতে দেখে বাঘাযতীন বুঝতে পারলেন আর লড়াই করা সম্ভব নয় | নিজের গায়ের রক্তমাখা সাদা শার্ট উড়িয়ে যুদ্ধ বিরতির সংকেত জানিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন | আত্মসমর্পণ কালে বাঘাযতীন টেগার্টকে বললেন শুধু এর মুখে এক ফোঁটা জল দেবার জন্য আমি যুদ্ধ বন্ধ করে ধরা দিচ্ছি | এখান থেকে আহত বাঘাযতীন কে বালেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানেই 1915 সালের 9ই সেপ্টেম্বর তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন
নদীয়া জেলার একটি গ্রাম | সন্ধ্যার অন্ধকারে গ্রামের পথঘাট জনশূন্য হয়ে যায় | কারণ বিরাট এক রয়েল বেঙ্গল টাইগার এলাকায় হানা দিতে শুরু করেছে | তখন ওই গ্রামে এসেছিলেন যতীন মুখোপাধ্যায় | কলকাতার সরকারি চাকুরে | এই গ্রামে মামার বাড়িতে তাঁর ছোটোবেলার দিনগুলো কেটে ছিল | যতীন ঠিক করলেন বাঘের সাথে তিনি লড়াই করবেন এবং বাঘের উপদ্রব থেকে গ্রাম বাসীদের রক্ষা করবেন | কিন্তু কীভাবে তিনি বাঘের মোকাবিলা করবেন? তাঁর কাছে তো বন্দুক নেই | শেষ পর্যন্ত একটা ভোজালি নিয়ে বাঘের মুখোমুখি দাঁড়াবার সিদ্ধান্ত নিলেন | যতীনের মামাতো ভাইয়ের একটা বন্দুক ছিল | তিনি যতীনের এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য তার সঙ্গী হয়েছিলেন | কিন্তু মামাতো ভাইয়ের বন্দুকের গুলিতে কিন্ত বাঘ বধ হয়নি | কারণ তাঁর বন্দুকের গুলি হয়েছিল. লক্যভ্রষ্ট | গুলির আঘাতে বাঘটা আহত হয়েছিল | আহত হয়ে বাঘটি ভয়ংকর হয়ে ওঠে | গুলি খেয়ে বাঘটি যতীন্দ্রনাথের দিকে ছুটে আসে | যতীন্দ্রনাথকে আক্রমণ করে | যতীন বাঘের মাথায় ভোজালি দিয়ে বারবার আঘাত করতে থাকেন | বাঘ তাঁর দুটি হাঁটুতে কামড় বসালে | রক্তাক্ত যতীন তখনও উন্মুক্তের মতো বাঘটার সঙ্গে লড়াই করছেন | নিজের দেহের আঘাত অগ্রাহ্য করে হিংস্র ভয়ংকর বাঘকে মাটিতে চেপে ধরলেন | শেষ অব্দি ভোজালিটা বাঘের পেটে বসিয়ে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন | সেই আঘাতের বাঘটা শেষ হয়ে গেল | আর সেদিন থেকে সকলের কাছে তিনি পরিচিত হলেন বাঘাযতীন হিসেবে |
কৃষ্ণনগরের এ.ভি স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যতীন এলেন কলকাতায়, ভর্তি হলেন কলেজে | তখন থেকেই. যতীন্দ্রনাথ ছিলেন স্বাধীনচেতা মানুষ | তিনি ঠিক করলেন পড়াশোনায় আর সময় নষ্ট করবেন না | শর্টহ্যান্ড ও টাইপ রাইটিং শিখলেন | তখনকার দিনে এই দুটি বৃত্তি শিক্ষার খুবই দাম ছিল | 1904 সালে সরকারি চাকুরি লাভভ করলেন | এই চাকুরীতে যোগ দেবার আগে থেকেই বিপ্লবী দলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঘটে গিয়েছিল | অনুশীলন সমিতিতে যোগ দান করেছিলেন তিনি | হাওড়া ষড়যন্ত্র মামলার জন্য তাঁকে এক বছর ধরে নির্জন কারাগারে থাকতে হয়েছিল | এরফলে তাঁর সরকারি চাকুরী চলে গিয়েছিল এবং তখন বাঘাযতীন ঠিকাদারির কাজ শুরু করেন |
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে বাঘাযতীন গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হন | তিনি সর্বভারতীয় বৈপ্লবিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গোপনে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জাপান ও জার্মানি থেকে অস্ত্রাদি আমদানি করে সশস্ত্র বিপ্লবের পরিকল্পনা করেন | ঠিক হয় 'মেভারিক ' নামক জার্মান জাহাজে অস্ত্র এনে বালেশ্বরে রেললাইন অধিকার করে ইংরেজের যাতায়াত পথ অবরোধ করবেন | বাঘাযতীন তাঁর চারজন সহকর্মী কে নিয়ে চলে গেলেন বালেশ্বরের কাছে কোপাতবোদা গ্রামে | সন্নাসী সেজে আশ্রম গড়লেন | কবে জার্মান যুদ্ধ জাহাজ পৌছবে তার জন্য প্রতিক্ষার প্রহর শুরু হল | এই জাহাজ শেষ পর্যন্ত ভারতে আসেনি | বিপ্লবীদের প্রতিক্ষা ব্যর্থ হল | বাঘাযতীন আবার অস্ত্র আমদানির পরিকল্পনা করলেন কিন্তু এবারও ব্যর্থ হলেন | অন্যদিকে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিপ্লবী দের ধরতে পুলিশ কমিশনার টেগার্ট বালেশ্বরে পৌঁছে গেলেন | গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বাঘাযতীন টেগার্টের বালেশ্বরে আসার খবর পেলেন | বাঘাযতীন তাঁর কিশোর চারসঙ্গী চিত্তপ্রিয়, মনোরঞ্জন, নীরেন ও জ্যোতিষ কে তাঁর সঙ্গ ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলেন | কারণ পুলিশ এদের কাউকে চেনে না | কিন্তু বিপ্লবী কিশোর রা নেতাকে ত্যাগ করতে রাজি হলেন না |
শেষপর্যন্ত 1915 সালের 9ই সেপ্টেম্বর বুড়িবালাম নদীর ধারে চাষখন্ড নামে একটা জায়গায় বাঘাযতীন তাঁর চার কিশোর সঙ্গী কে নিয়ে খাদের মধ্যে লুকিয়ে রইলেন | একদিকে মাত্র পাঁচ জন অন্যদিকে অসংখ্য সৈন্য | বিপ্লবীদের কাছে দেশী পিস্তল | ব্রিটিশ দের হাতে রাইফেল | শুরু হল গুলি বর্ষণ | বিপ্লবী রা একসঙ্গে গুলি ফায়ার করলেন | যাতে শত্রুপক্ষ বুঝতে না পারে , সংখ্যায় তাঁরা কতজন আছেন |শেষ অব্দি বিপ্লবীদের গুলি ফুরিয়ে গেল | লড়াই চলাকালীন মৃত্যুপথযাত্রী চিত্তপ্রিয়কে একফোঁটা জলের জন্য ছটফট করতে দেখে বাঘাযতীন বুঝতে পারলেন আর লড়াই করা সম্ভব নয় | নিজের গায়ের রক্তমাখা সাদা শার্ট উড়িয়ে যুদ্ধ বিরতির সংকেত জানিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন | আত্মসমর্পণ কালে বাঘাযতীন টেগার্টকে বললেন শুধু এর মুখে এক ফোঁটা জল দেবার জন্য আমি যুদ্ধ বন্ধ করে ধরা দিচ্ছি | এখান থেকে আহত বাঘাযতীন কে বালেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানেই 1915 সালের 9ই সেপ্টেম্বর তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন
Casino Online for PC Windows 10, 10, 8 & 7
ReplyDeleteCasino Online for 서귀포 출장마사지 PC Windows 10, 8 문경 출장안마 & 7. This website uses cookies. This ensures you get the best experience 천안 출장샵 with 광양 출장마사지 your 구리 출장마사지 playing. If you like using