Wednesday 9 March 2016

আড়বান্দী এবং দেনুই গ্রামের নামকরণের ইতিহাস







নদীয়া জেলার বেশ কিছু জায়গার নামকরণ করা হয়েছে দানপত্র থেকে | এমনই দুটি গ্রামের হল -

1| নদীয়ার শান্তিপুর থানার অন্তর্গত একটি গ্রাম আড়বান্দী |
এবং
2| দেনুই |

এই দুটি গ্রামের নামকরণের ইতিহাস :::------

আড়বান্দী ::::------
নদীয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদারের পৌত্র ছিলেন রাঘব রায় ( রাজত্বকাল 1618 - 1676 ) | রাজা রাঘব রায় তৎকালীন নবদ্বীপের প্রধান নৈয়ায়িক প্রখ্যাত নব্যন্যায় - শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত গোবিন্দ ন্যায়বাগীশ ভট্টাচার্যকে 1660 খ্রিস্টাব্দে এক হাজার বিঘা পরিমিত এক বিস্তীর্ণ এলাকার ভূমি দান করেন |কৃষ্ণনগরে নদীয়া কালেকটারির রেকর্ড রুমে এই ভূমিদানের সনদপত্র ( নং 3728/রাইডালি নং 8170 ) সংরক্ষিত আছে | গোবিন্দ ন্যায়বাগীশ দানসূত্রে প্রাপ্ত. এই ভূমির একাংশে গ্রাম পত্তন করেন বসতি স্থাপন করেন | গোবিন্দ নদীয়ারাজের সহায়তায় কিছু ঘরবাড়ি নির্মাণ করে সপরিবারে এখানে বাস করতে থাকেন | তখন গুরুগৃহে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হত | গোবিন্দ গৃহেও শিক্ষার্থীরা থেকে শাস্ত্র অধ্যয়ন করতেন | অনুমিত হয়, অচিরেই এই স্থান বিদ্যাচর্চা কেন্দ্ররুপে প্রতিষ্ঠিত হয় | নদীতীরবর্তী এলাকাহেতু গ্রামপত্তনের সময় নদী বরাবর আড়াআড়িভাবে দুটি মাটির বাঁধ দেওয়া হয় গ্রামকে নদীর বন্যা প্লাবন থেকে রক্ষা করার জন্য | বাঁধ দুটির লৌকিক নাম হয়. - আড়বান্দী আড়বান্দা | আর এই বাঁধ থেকে গ্রামনাম হয় আড়বান্দী |


দেনুই ::---

গোবিন্দ ন্যায়বাগীশ নদীয়ারাজের কাছ থেকে যে 1000 বিঘা জমি লাভ করেছিলেন সেই জমির 361 একর পরিমিত জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে গ্রাম দেনুই | আড়বান্দী দেনুই পাশাপাশি গ্রাম |

বাংলায় ' দেনো ' লৌকিক শব্দ প্রচলিত | দেনো শব্দ এসেছে দান থেকে | দেনো শব্দের অর্থ হল - ক্রিয়াকর্ম উপলক্ষে যা দান করা হয় | যেমন - দেনো জমি অর্থাৎ দান করা জমি | আবার দান করা জমিকে দেনোই জমিও বলা হয় | তাই দেনোই জমি থেকে গ্রামনাম হয়েছে পরবর্তী কালে দেনুই |

আড়বান্দী এবং দেনুই দুটি গ্রামেরই অস্তিত্ব আজও বর্তমান | শান্তিপুর থানার 66 নং মৌজা আড়বান্দী | বর্তমানে আড়বান্দীতে একটি প্রাইমারী এবং হাইস্কুল আছে | এখানে প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে ব্রহ্মপূজা উপলক্ষে এক মেলার আয়োজন হয় |অন্যদিকে শান্তিপুর থানার 65 নং মৌজা দেনুই | দেনুই গ্রামটি সম্পর্কে বলার এটাই যে গ্রামটি আজও তার অস্তিত্ব বজায় রেখেছে এবং অনেক বছর ধরে গ্রামটির কোনো উন্নয়ন না হলেও বর্তমানে হচ্ছে |

No comments:

Post a Comment