Thursday, 1 October 2015

বাদকুল্লার রেল

1862 সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলের অধীনে কলিকাতা থেকে নদীয়া জেলার কুষ্টিয়া পর্যন্ত রেলপথ চালু হয় | এই রেলপথ তখন বেসরকারি কোম্পানির অধীন ছিল | 1877 সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে নাম হয়ে এই রেলপথ সরকারের হাতে আসে | সে সময় নদীয়া জেলারভিতরে 100 মাইল রেলপথ ও 21 টি স্টেশন ছিল | ঐ সময় কৃষ্ণনগরে কোন স্টেশন ছিল না | কৃষ্ণনগরের লোকদের বগুলায় এসে ট্রেন ধরতে হত | 1898 সালে রাণাঘাট থেকে কৃষ্ণনগরের ভায়া শান্তিপুর
20 মাইল দীর্ঘ একটি ছোট রেলের লাইন মার্টিন কোম্পানি চালু করেন | 1904 সালে রাণাঘাট থেকে কৃষ্ণনগরের উপর দিয়ে লালগোলা লাইন চালু হয় | তখন নদীয়া জেলার মধ্যে এই পথে 48 মাইল রেলপথ ও 8. টি স্টেশন চালু হয় | সে সময় থেকেই বাদকুল্লা রেল স্টেশনের পত্তন |
বর্তমানে আমরা যেখানে বাদকুল্লা স্টেশন দেখি, আগে সেখানে বাদকুল্লা স্টেশন ছিল না | পাতুয়ার রেলগেট ছেড়ে যেয়ে যে শনি মন্দির আমরা দেখতে পাই, সেখানেই প্রথম স্টেশন গড়ে ওঠে | কথিত আছে, বাদকুল্লার সমৃদ্ধ জমিদার প্রয়াত গগন চন্দ্র বিশ্বাস পাতুয়ার স্টেশন থেকে নেমে নিজের বাড়িতে আসতে খুব কষ্ট পেতেন | তাই তিনি নিয়মিত বাদকুল্লায় ট্রেন এলে এলার্ম চেন টেনে গাড়ি থামিয়ে ফাইন দিয়ে বাড়ি যেতেন | কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি 180 বিঘা জমি রেলকে দান করে রেলস্টেশন বর্তমান বাদকুল্লায় নিয়ে আসেন |
স্বাধীনতার পর রেল পরিবহনের প্রভূত উন্নতি হয়েছে | 1948 সালের হিসাবে দেখা যায় শিয়ালদহ - কৃষ্ণনগর 4 টি লোকাল ট্রেন, রানাঘাট - কৃষ্ণনগর 4 টি লোকাল ট্রেন যাতায়াত করত | এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার তাহেরপুর এবং কালীনারায়ণপুর এই দুটি রেলস্টেশন বাদকুল্লার অনেক পড়ে চালু হয় | 1954 সালের 5 ই জুলাই তাহেরপুর এবং 1955 সালের 1 লা এপ্রিল কালীনারায়ণপুর স্টেশন চালু হয় | এরপর আসে রেলপথের বৈদ্যুতিকরণ ব্যবস্থা | 1965 সালে বাদকুল্লার উপর দিয়ে রেলপথের বৈদ্যুতিকরণ সমাপ্ত হয় |
বর্তমানে বাদকুল্লা স্টেশনে তিনটি প্লাটফর্ম আছে | এছাড়া বসার জায়গা, পায়খানা, প্রস্রাবের জায়গা, পুরো প্লাটফর্ম জুড়ে শেড দেওয়া এবং ওভারব্রিজের ব্যবস্থা রয়েছে |

তথ্য সূত্র :- বাদকুল্লা পরিচয়

No comments:

Post a Comment